প্রবাসীদের ভোটদানের পেছনে ইসির ব্যায় ৪০০ কোটি টাকা।

ছবিঃ সংগৃহীত
দ্য বাংলাদেশ ন্যারেটিভ
প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৫০ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশিকে ভোটার করার উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিশ্বের ৪০টি দেশে থাকা প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ প্রবাসীর মধ্যে অন্তত এই সংখ্যককে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দিতে চায় সংস্থাটি।
ইসি জানিয়েছে, প্রবাসীরা এবার অনলাইনে নিবন্ধন করে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন। এজন্য তৈরি করা হচ্ছে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ নামের একটি অ্যাপ। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৯ কোটি টাকা। এছাড়া ৫০ লাখ ভোটারের পোস্টাল ব্যালট পাঠানো ও ফেরত আনার জন্য খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা।
এর আগে প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম ভাষণেই প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার ঘোষণা দেন। সেই অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে পোস্টাল ব্যালট ব্যবস্থায় এগোনোর সিদ্ধান্ত নেয়। এই পদ্ধতিতে শুধু প্রবাসীরাই নয়, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং দেশের কারাগারে থাকা বন্দিরাও প্রথমবারের মতো ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, পরীক্ষামূলক বা সীমিত পরিসরে হলেও এবারই প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে চায় কমিশন। এজন্য কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, বিভিন্ন দেশে ঠিক কতসংখ্যক প্রবাসী আছেন তার সঠিক হিসাব নেই। তবে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনশক্তি ব্যুরো, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বায়রা থেকে তথ্য নিয়ে ইসি জানিয়েছে, ৪০টি দেশে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি আছেন। এর মধ্যে অন্তত ৭০ শতাংশের এনআইডি রয়েছে। সেখান থেকে প্রায় ৫০ লাখ ভোটারকে এবারের নির্বাচনে পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। যদিও আন্তর্জাতিকভাবে প্রবাসীদের ভোটদানের হার সাধারণত ২০-২২ শতাংশের মধ্যে সীমিত থাকে।
ইসির পরিকল্পনা অনুযায়ী, নভেম্বরে চালু হবে অনলাইন নিবন্ধনের অ্যাপ। সেখানে এনআইডি নম্বর, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করতে পারবেন প্রবাসীরা। এরপর তাদের আলাদা ভোটার তালিকা করা হবে। তপশিল ঘোষণার পর প্রার্থীর নাম ছাড়া শুধু প্রতীকের ব্যালট ছাপানো হবে, যেটি ডাক বিভাগের মাধ্যমে পাঠানো হবে নিবন্ধিত ঠিকানায়।
মনোনয়ন যাচাই-বাছাই শেষে প্রার্থিতা চূড়ান্ত হলে নিবন্ধিত ভোটারদের মোবাইলে মেসেজ দিয়ে প্রার্থীদের প্রতীক জানানো হবে। প্রবাসীরা সেই প্রতীকে ব্যালটে ভোট দিয়ে ডাকযোগে ফেরত পাঠাবেন। দেশে ভোটের দিন সংশ্লিষ্ট আসনের অন্যান্য ভোটের সঙ্গে এই ব্যালট গণনা করা হবে।
ডাক বিভাগ জানিয়েছে, সবচেয়ে দূরের দেশে চিঠি পাঠাতে ও ফিরিয়ে আনতে প্রায় ২৮ দিন লাগে। এজন্য দেশে ভোটের আগেই প্রবাসীরা ভোট দিতে পারবেন। ইসি দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমের মাধ্যমে এ নিয়ে প্রচারণা চালাবে।
সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই তারা এই সুযোগ পাবেন না। কেবল এনআইডিধারী প্রবাসীরাই ভোটে অংশ নিতে পারবেন।